টার্কি
(Turkey) মেলিয়াগ্রিডিডিই পরিবারের এক
ধরনের
বড়
আকৃতির
পাখি
বিশেষ। এগুলো
দেখতে
মুরগির
বাচ্চার মতো
হলেও
তুলনামূলকভাবে অনেক
বড়। বিশ্বের সর্বত্র টার্কি
গৃহপালিত পাখিরূপে লালন-পালন করা হয়। এরা
পরিবেশের সঙ্গে
দ্রুত
নিজেকে
মানিয়ে
নিতে
পারে। পালনের
জন্য
উন্নত
অবকাঠামো দরকার
হয়
না
। এরা প্রতিদিন মোট
খাদ্যের ৫০-৬০ ভাগ নরম
ঘাস
খায়। তাই
খাবার
খরচ
কম। রোগবালাই (বার্ড
ফ্লু,
গুটি
বসন্ত,
ঠাণ্ডাজনিত রোগ
ছাড়া
এখন
পর্যন্ত এদের
অন্য
কোনো
রোগ
পরিলক্ষিত হয়নি)
কম
বলে
চিকিৎসা খরচ
কম। মাংস
উৎপাদনের দিক
থেকে
খুবই
ভালো
(৬
মাস
বয়সে
৫-৬ কেজি)।
পাখির
মাংস
হিসেবে
এটা
মজাদার
এবং
কম
চর্বিযুক্ত। তাই গরু
বা
খাসির
মাংসের
বিকল্প
হতে
পারে। আমাদের
দেশে
অনেকের
ব্রয়লার মুরগির
মাংসের
ওপর
অনীহা
আছে। তাদের
জন্য
এটা
হতে
পারে
প্রিয়
খাবার। প্রোটিনের নতুন
আরেকটি
উৎস
হিসেবে
টার্কি
হতে
পারে
বাণিজ্যের নতুন
দিগন্ত।
টার্কি পাখি পরিচিতি :
আমাদের
দেশের
অনুকূল
আবহাওয়া ও
পরিবেশে পশুপাখি পালন
অন্যান্য দেশের
তুলনায়
সহজ।
আবার
কিছু
প্রাণী
আছে
যারা
দ্রুত
পরিবেশের সঙ্গে
নিজেকে
মানিয়ে
নিতে
পারে।
আর
টার্কি
পাখি
সে
রকম
একটি
সহনশীল
জাত,
যে
কোনো
পরিবেশ
দ্রুত
এরা
নিজেকে
মানিয়ে
নিতে
পারে।
এরা
বেশ
নিরীহ
ধরনের
পাখি,
মুক্ত
অথবা
খাঁচা
উভয়
পদ্বতিতে পালন
করা
যায়।
৬-৭ মাস বয়স
থেকে
ডিম
দেয়া
শুরু
করে
এবং
বছরে
২-৩ বার ১০-১২টি করে ডিম
দেয়।
একটি
মেয়ে
টার্কির ৫-৬ কেজি এবং
পুরুষ
টার্কি
৮-১০ কেজি ওজন
হয়।
এদের
মাংস
উৎকৃষ্ট স্বাদের। ঘাস,
পোকামাকড়, সাধারণ
খাবার
খেতে
এরা
অভ্যস্ত, তবে
উন্নত
খাবার
দিলে
ডিম
ও
মাংসের
পরিমাণ
বেশি
পাওয়া
যায়।
৪-৫
মাস
বয়সের
টার্কি
ক্রয়
করা
ভালো,
এতে
ঝুঁকি
কম
থাকে
এবং
লিঙ্গ
নির্ধারণ সহজ
হয়,
এরকম
বয়সের
এক
জোড়া
টার্কিও দাম
হবে
প্রায়
৪৫০০-৫০০০ টাকা। প্রথমে
বাণিজ্যিকভাবে শুরু
না
করে
৮-১০ জোড়া দিয়ে
শুরু
করা
ভালো,
কারণ
তাতে
সুবিধা
অসুবিধাগুলো নির্ণয়
করা
সহজ
হয়।
রোগবালাই : টার্কি পাখির তেমন বড় কোনো রোগবালাই নেই। চিকেন পক্সের টিকা নিয়মিত দিলে এ রোগ এড়ানো সম্ভব। অতি বৃষ্টি বা বেশি শীতের সময় মাঝে মাঝে ঠা-াজনিত রোগ দেখা যায়, রেনামাইসিন জাতীয় ওষুধ দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে নিয়োমিত টিকা দিলে এসব রোগ থেকে সহজেই টার্কিকে রক্ষা করা যায়।
টিকাপ্রদান সূচি : এক দিন বয়স- এনডি-বি১ স্ট্রেইন # ৪র্থ ও ৫ম সপ্তাহ- ফাউল পক্স # ৬ষ্ঠ সপ্তাহ - এনডি-(আর২বি); ৮-১০ সপ্তাহ - কলেরা ভ্যাকসিন
টার্কি পালনের সুবিধা
রোগবালাই : টার্কি পাখির তেমন বড় কোনো রোগবালাই নেই। চিকেন পক্সের টিকা নিয়মিত দিলে এ রোগ এড়ানো সম্ভব। অতি বৃষ্টি বা বেশি শীতের সময় মাঝে মাঝে ঠা-াজনিত রোগ দেখা যায়, রেনামাইসিন জাতীয় ওষুধ দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে নিয়োমিত টিকা দিলে এসব রোগ থেকে সহজেই টার্কিকে রক্ষা করা যায়।
টিকাপ্রদান সূচি : এক দিন বয়স- এনডি-বি১ স্ট্রেইন # ৪র্থ ও ৫ম সপ্তাহ- ফাউল পক্স # ৬ষ্ঠ সপ্তাহ - এনডি-(আর২বি); ৮-১০ সপ্তাহ - কলেরা ভ্যাকসিন
টার্কি পালনের সুবিধা
- এদের মাংস উৎপাদন ক্ষমতা অনেক, টার্কি ব্রয়লার মুরগির থেকে দ্রুত বাড়ে;
- ঝামেলাহীনভাবে দেশি মুরগির মতো পালন করা যায়; অল্প পুঁজিতে একটি আদর্শ টার্কির খামার করা যায়;
- টার্কি পালনে তুলনামূলক খরচ কম, দানাদার খাদ্যের পাশাপাশি ঘাস, লতা-পাতা খেতেও পছন্দ করে;
- টার্কি দেখতে সুন্দর, তাই বাড়ির শোভাবর্ধন করে;
- টার্কির মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি, চর্বি কম। তাই গরু কিংবা খাসির মাংসের বিকল্প হতে পারে;
- টার্কির মাংসে অধিক পরিমাণ জিংক, লৌহ, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন ই ও ফসফরাস থাকে। এ উপাদানগুলো মানব শরীরের জন্য উপকারী এবং নিয়মিত এ মাংস খেলে কোলেস্টেরল কমে যায়;
- টার্কির মাংসে এমাইনো এসিড ও ট্রিপটোফেন অধিক পরিমাণে থাকায় এর মাংস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়;
- অন্যান্য পাখির তুলনায় রোগবালাই কম এবং কিছু নিয়ম মেনে চললে খামারে ঝুঁকি অনেক কমে যায়;
- উচ্চমূল্য থাকায় খরচের তুলনায় আয় অনেক বেশি।
পালন পদ্ধতি : দুইভাবে টার্কি
পালন
করা
যায়-
০১.
মুক্ত
চারণ
পালন
পদ্ধতি
ও
০২.
নিবিড়
পালন
পদ্ধতি
মুক্ত চারণ পালন পদ্ধতি
মুক্ত চারণ পদ্ধতিতে এক একর ঘেরা জমিতে ২০০-২৫০টি পূর্ণ বয়স্ক টার্কি পালন করা যায়। রাতে পাখিপ্রতি ৩-৪ বর্গফুট হারে জায়গা লাগে। চরে খাওয়ার সময় তাদের শিকারি জীবজন্তুর হাত থেকে বাঁচাতে হবে। ছায়া ও শীতল পরিবেশ জোগানর জন্য খামারে গাছ রোপণ করতে হবে। চারণভূমি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করতে হবে এতে পরজীবীর সংক্রমণ কম হয়। সুবিধা : খাবারের খরচ ৫০ শতাংশ কম হয়; স্বল্প বিনিয়োগ : খরচের তুলনায় লাভের হার বেশি।
স্বাস্থ্য রক্ষা : মুক্তচারণ ব্যবস্থায় পালিত টার্কির অভ্যন্তরীণ (গোল কৃমি) ও বাহ্য (ফাউল মাইট) পরজীবী সংক্রমণের সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি থাকে। তাই পাখিদের ভালো বিকাশের জন্য মাসে একবার ডিওয়ার্মিং ও ডিপিং করা আবশ্যক।
নিবিড় পালন পদ্ধতি : বাসস্থান টার্কিদের রোদ, বৃষ্টি, হাওয়া, শিকারি জীবজন্তু থেকে বাঁচায় ও আরাম জোগায়। অপেক্ষাকৃত গরম অঞ্চলগুলোতে খামার করলে ঘরগুলো লম্বালম্বি পূর্ব থেকে পশ্চিমে রাখতে হবে। খোলা ঘরের প্রস্থ ৯ মিটারের বেশি হওয়া চলবে না। মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত ঘরের উচ্চতা ২.৬ থেকে ৩.৩ মিটারের মধ্যে থাকতে হবে। বৃষ্টির ছাঁট আটকাতে ঘরের চালা এক মিটার বাড়িয়ে রাখতে হবে। ঘরের মেঝে সস্তা, টেকসই, নিরাপদ ও আর্দ্রতারোধক বস্তু যেমন কংক্রিটের হওয়া বাঞ্ছনীয়। কম বয়সি এবং প্রাপ্ত বয়স্ক পাখির ঘরের মধ্যে অন্তত ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং পাশাপাশি দুটি ঘরের মধ্যে অন্তত ২০ মিটার দূরত্ব থাকতে হবে। ডিপ লিটার পদ্ধতিতে টার্কি পালনের সাধারণ পরিচালনা ব্যবস্থা মুরগি পালনেরই মতো, তবে বড় আকারের পাখিটির জন্য যথাযথ বসবাস, ওয়াটারার ও ফিডারের জায়গার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
সুবিধা : উন্নত উৎপাদন দক্ষতা; উন্নততর পরিচালন ও ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ।
নিবিড় পালন ব্যবস্থায় খাদ্য : নিবিড় পালন ব্যবস্থায় টার্কি মুরগিকে ম্যাশ ও পেলেট (ট্যাবলেট) দুইভাবেই খাবার দিতে হবে। মুরগির তুলনায় টার্কির শক্তি, প্রোটিন ও খনিজের প্রয়োজন বেশি। সেজন্য টার্কির খাবারে এগুলোর আধিক্য থাকতে হবে। খাবার মাটিতে না দিয়ে ফিডারে দিতে হবে। যেহেতু পুরুষ ও মাদির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শক্তির (এনার্জি) পরিমাণ আলাদা, তাই ভালো ফল পাওয়ার জন্য তাদের পৃথকভাবে পালন করতে হবে। টার্কিদের সব সময় অবিরাম পরিষ্কার পানির প্রয়োজন। গ্রীষ্মকালে ওয়াটারারের সংখ্যা বাড়িয়ে দিতে হবে এবং আপেক্ষতৃক ঠাণ্ডা সময়ে খাবার দিতে হবে। পায়ের দুর্বলতা এড়াতে দিনে ৩০-৪০ গ্রাম হারে ঝিনুকের খোসার গুঁড়া দিতে হবে এবং খাবারে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হলে তা আস্তে আস্তে করতে হবে।
সবুজ খাদ্য : নিবিড় পদ্ধতিতে ড্রাই ম্যাশ হিসাবে মোট খাদ্যের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সবুজ খাবার দেয়া যায়। সব বয়সের টার্কির জন্য টাটকা লুসার্ন প্রথম শ্রেণীর সবুজ খাদ্য। এছাড়া খাবারের খরচ কম করার জন্য ডেসম্যান্থাস ও স্টাইলো কুচি করে টার্কিদের খাওয়ান যেতে পারে।
বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে টার্কি মুরগি পালন দিনে দিনে জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। টার্কি বাণিজ্যিক মাংস উৎপাদনের জন্য খুবই উপযুক্ত কিন্তু বাণিজ্যিকভাবে ডিম উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত নয়। তারা দেখতে খুব সুন্দর হয় এবং আপনার বাড়ির সৌন্দর্য বাড়াতে করতে সাহায্য করে। টার্কি মুরগি দ্রুত বড় হয়ে যায় এবং ব্রয়লার মুরগির মতো খাওয়ার উপযুক্ত হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের আবহাওয়া অন্যান্য পরিস্থিতিতে টার্কি মুরগি পালনের জন্য খুবই উপযুক্ত। এগুলোর পালন মুরগির মতো খুব সহজ। বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে টার্কি পালন-ব্যবসা করে ভালো মুনাফা অর্জনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। একটুখানি সচেতনতা, সরকারি গবেষণা এবং ক্রেতা-বিক্রেতার পারস্পরিক অংশগ্রহণে এ টার্কিই হয়ে উঠতে পারে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যম এমনকি ব্যপক উৎপাদনের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উপায়।
ReplyDeleteইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধী
ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধী (হিন্দি: इंदिरा प्रियदर्शिनी गांधी) ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ভারতের প্রথম ও আজ পর্যন্ত একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী। প্রাণখোলা মুক্তমনের অধিকারী একজন মানুষ ছিলেন ইন্দিরা গান্ধীজী মুক্তিযুদ্ধের অকৃত্রিম বন্ধু ।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা:
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সমর্থনে তিনি বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রগুলোর সমর্থন আদায় করেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ও সামরিক সহায়তা দিয়েছেন। প্রায় ১ কোটি শরণার্থীর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে জীবন বাঁচিয়েছেন। তাই তার এই মহান কাজের স্বীকৃতি দিতেই বাংলাদেশ সরকার ২০১১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ৪০তম বছরে ভারতীয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ আরও বেশকিছু বিদেশি মানুষকে রাষ্ট্রীয় সম্মাননায় ভূষিত করে। ইন্দিরা গান্ধীকে ভূষিত করা হয় বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা পদকে (মরণোত্তর)। ওই বছরের ২৫ জুলাই ইন্দিরা গান্ধীর পুত্রবধূ সোনিয়া গান্ধীর হাতে তুলে দেওয়া হয় এ পুরস্কার। এটি ছিল বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো কোনো বিদেশির অর্জন করা সর্বোচ্চ সম্মাননা। দীর্ঘ নয় মাস বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামকে সফল করতে অর্থ, অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ দিয়ে যে বিদেশি রাষ্ট্রনেতা সবচেয়ে তাত্পর্যপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তিনি ইন্দিরা গান্ধী। তখন শক্তিশালী আমেরিকা ও চীন ছিল পাকিস্তানের পক্ষে। তিনি প্রথমে সরাসরি পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধে না জড়িয়ে বাংলাদেশে দখলদার বাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতন ও শরণার্থী সমস্যাটি বিশ্বসম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরেন। বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বজনমত গড়ে তুলতে ইউরোপ ও আমেরিকায় ঝটিকা সফর করেন।
এদিকে দেশে শরণার্থীদের ভরণ-পোষণেরও দায়িত্ব নেন। মুক্তিযুদ্ধে পশ্চিম পাকিস্তানের বিপুলসংখ্যক অস্ত্রশস্ত্র আর বিশাল সেনাবাহিনী ছিল। বাংলাদেশের যুদ্ধ করতে চাওয়া মানুষগুলোকে ভারতে গেরিলা প্রশিক্ষণ প্রদানে ইন্দিরা গান্ধী সহায়তা করেন। তাদের সরবরাহ করেন অস্ত্র। রাশিয়াও এক্ষেত্রে সাহায্য করে তাকে। বাংলাদেশের মানুষের স্বাধীনতার এ যুদ্ধে প্রশিক্ষণ প্রদান আর অস্ত্রের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য তিনি খরচ করেন ভারতের প্রায় সাত হাজার কোটি রুপি। ইন্দিরা গান্ধী নিজের সৈন্যদের পাঠিয়ে দেন বাংলাদেশকে সাহায্য করতে।
পাঠিয়েছেন বিমানশক্তি। ২৫ মার্চ ঢাকায় গণহত্যার পর ২৭ মার্চ ভারতের লোকসভায় ভাষণ দিয়ে করণীয় তুলে ধরেন তিনি। ৩১ মার্চ বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধে সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রস্তাব লোকসভায় উত্থাপন করলে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। মুজিবনগর সরকার গঠন হওয়ার পরপরই আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন ইন্দিরা। মে মাসে বেলগ্রেডের বিশ্বশান্তি কংগ্রেসে ভারতীয় প্রতিনিধিরা ইন্দিরা গান্ধীর বাণী পাঠ করেন। বাণীতে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন প্রসঙ্গে প্রায় ৮০টি দেশের প্রতিনিধি করতালি দিয়ে সাদরে গ্রহণ করেন। ৮ আগস্ট বিশ্বের সব রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের কাছে ভারত সরকারের পক্ষে প্রেরিত এক বার্তায় শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন রক্ষায় ও তার মুক্তির দাবিতে ইয়াহিয়া খানের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী তিনি মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে সোচ্চার ছিলেন। তবুও তার কণ্ঠে বাংলাদেশ শব্দটি শোনার অধীর আগ্রহ ছিল এদেশবাসীর।
১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরে নিজের বক্তব্য থেকে খুব সচেতনভাবে পূর্ব বাংলা শব্দটি কেটে ফেলে বাংলাদেশকে প্রবেশ করান তিনি। ডিসেম্বরের ৬ তারিখ লোকসভার ভাষণে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি ঘোষণা করেন। ভারতের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। তিনি শুধু এই উপমহাদেশেরই নন বরং গোটা বিশ্বের অগ্রগণ্য রাজনীতিবিদদের একজন। আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই একমত, ইন্ধিরা গান্ধী বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী নারী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী ১৯১৭ সালের ১৯ নভেম্বর ভারতের বিখ্যাত নেহেরু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম পথিক কংগ্রেস নেতা মতিলাল নেহেরুর নাতনি, বাবা বিখ্যাত পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু আর মা কমলা দেবীর মেয়ে ইন্দিরা। বলা হয়, তার রক্তেও ছিল রাজনীতি। ১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর নিজের দেহরক্ষীর গুলিতে নিহত হন তিনি। তাঁর নিজের দেহরক্ষীরাই তাঁর জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দেয়৷